প্রধানমন্ত্রী আজ চীন সফরে যাচ্ছেন

শেরপুর নিউজ ডেস্ক: চার দিনের সফরে আজ চীন যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের সফরে কোনো চুক্তি না হলেও ২০টির মতো সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। এছাড়া সফরে রোহিঙ্গা সমস্যা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সংকট সমাধানের জন্য চীনের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়টি আলোচিত হবে।

এদিকে গতকাল রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানান, চীন আমাদের বড় উন্নয়ন সহযোগী। চীনের অনেক বিনিয়োগ আছে। তারা আমাদের অবকাঠামো উন্নয়নে বড় ভূমিকা রেখেছে। উন্নয়ন ইস্যুটি আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার থাকবে এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা অগ্রাধিকার পাবে।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, ডিজিটাল ইকোনমি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতে সহায়তা, ষষ্ঠ ও নবম বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ নির্মাণ, বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য রপ্তানি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পিপল টু পিপল কানেকটিভিটি প্রভৃতি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে আয়োজিত ভোজসভার মাধ্যমে গ্রেট হলে উল্লিখিত সাক্ষাতের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে। ওই দিন বিকালে প্রধানমন্ত্রী চীনের রাষ্ট্রপতি শি চিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে বাংলাদেশ ও চীন যৌথ বিবৃতি দেবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, চীন সফরের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী সোমবার (আজ) বেলা ১১টায় বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং একই দিন চীনের স্থানীয় সময় বিকাল ৬টায় বেইজিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে এবং যথাযথ সম্মান প্রদর্শনপূর্বক অভ্যর্থনা জানানো হবে। সফরকালে অর্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিব, অন্য সচিবরাসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিন লিকুনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী ‘সামিট অন ট্রেড, বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিস বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চায়না’ শীর্ষক সম্মেলনে অংশ নেবেন। দুপুরে প্রধানমন্ত্রী চীনের পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের ১৪তম জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াং হানিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বিকালে প্রধানমন্ত্রী ঐতিহ্যবাহী তিয়েনআনমেন স্কয়ারে শ্রদ্ধা জানাবেন। রাতে তিনি বেইজিংস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেবেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ১০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সাক্ষাতের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। একই স্থানে প্রধানমন্ত্রী ও চীনের প্রিমিয়ার অব দ্য স্টেট কাউন্সিল দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলসহ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। এরপর দুই দেশের সরকারপ্রধানের উপস্থিতিতে প্রায় ২০টির মতো সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে এবং কিছু প্রকল্প উদ্বোধনের ঘোষণা দেওয়া হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১১ জুলাই বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীরা চীন থেকে দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন। ওইদিন দুপুর ২টায় তাদের ঢাকা অবতরণের কথা রয়েছে।