ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারে নানা উদ্যোগ গ্রহণ

 

শেরপুর নিউজ ডেস্ক:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, আবাসন ব্যবস্থা, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা, ক্যান্টিন, শিক্ষার্থীদের যাতায়াতসহ বিভিন্ন সেক্টর সংস্কারে নানা উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য লাউঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কর্মপরিকল্পনার কথা জানানো হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের খুঁটি।

হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা ইতোমধ্যে কথা বলা শেষ করেছি। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে সিন্ডিকেট সভা করতে পারব বলে আশা করছি। এরপর আমরা যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ ও ইনস্টিটিউটগুলো বিকেন্দ্রীকরণ করার কথা জানিয়েছেন উপাচার্য।

বিভাগ ও ইনস্টিটিউট সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত তারা নিজেরাই নিতে পারবেন বলে জানান উপাচার্য। এ ছাড়া কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থী বিদেশে পড়াশোনা বা একাডেমিক কাজে যোগ দিতে এনওসি (NOC) নিতে উপাচার্য বরাবর আসতে হবে না বলেও জানান তিনি। রেজিস্ট্রার পর্যন্ত এসে এসব কাজ সম্পাদন করা যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় দেখার জন্য আইন অফিস করার কথা জানান উপাচার্য।

আইন বিভাগের ডিন এবং চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে আইন অফিসে এক্সটার্নাল কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রশাসন ইতোমধ্যে হলের গণরুম বিলপ্তির আইনগতগত কাঠামো দিয়েছে। শিক্ষার্থীদেরকে হয়রানি কিংবা নির্যাতন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার বিষয়ে প্রশাসন শক্ত অবস্থানে থাকবে বলেও উপাচার্য নিশ্চিত করেন মতবিনিময় সভায়।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নসহ অন্যান্য নিপীড়ন ও বৈষম্যমূলক কার্যক্রম প্রতিরোধে নীতিমালা প্রণয়ন ও বর্তমানে থাকা নীতিমালাগুলো ওভারভিউ করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও মতবিনিময় সভায় জানানো হয়।

উপ-উপাচার্য সায়মা হক বিদিশা বলেন, মেন্টাল হেলথ কাউন্সেলিং এর ব্যবস্থা করা হবে।

শিক্ষার্থীরা স্বল্প খরচে এখান থেকে সেবা নিতে পারবে। গত কয়েক মাসের ট্রমা থেকে শিক্ষার্থীদের বের কিরার জন্য শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের যোগাযোগ বাড়াতে হবে। শিক্ষার্থীদের দম বন্ধ অবস্থা থেকে বের করে আনার জন্য সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সুযোগ করে দেওয়ার কথা ভাবছে প্রশাসন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
কুয়েত মৈত্রী বঙ্গমাতা হলসহ ছাত্রীদের হলগুলোর আবাসন সংকটের সমাধান তাৎক্ষণিক সম্ভব না, যতটুকু পারা যায় করা হবে বলে জানান উপ-উপাচার্য সাইমা হক বিদিশা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম ও প্রশাসনের নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্ত জানানো জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেজ ও একাউন্ট খোলার কথা মতবিনিময় সভায় জানায় কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য মাইক্রোবাস ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে। যেখানে ৫ থেকে থেকে ১০ টাকা হবে সর্বোচ্চ ভাড়া নেওয়া হবে জানান কোষাধ্যক্ষ।

শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টারনেট সুবিধা আনতে নূন্যতম খরচে ব্রডব্যান্ড বা ওয়াইফাই চালুর জন্য ইতোমধ্যেই বিটিসিএলের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান কোষাধ্যক্ষ। বুধবারের মধ্যে বিটিসিএল থেকে এ বিষয়ে প্রপোজাল আসতে পারে বলেও জানান তিনি। ক্যাম্পাস এলাকায় শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো মানের ক্যাফেটেরিয়া চালুর ব্যবস্থা করার কথাও জানান কোষাধ্যক্ষ।

নারী শিক্ষার্থীদের পর্দা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন কোনো ধরনের নেতিবাচক কিছু মোকাবেলা করতে না হয় সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান কোষাধ্যক্ষ।

সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এগুলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মপরিকল্পনার অংশ। এগুলোতে সংযোজন, বিয়োজন এবং পরিমার্জন আসতে পারে।