স্বৈরাচারের দোসরদের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক থাকুন -তারেক রহমান

 

শেরপুর নিউজ ডেস্ক:

পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারের দোসরদের নানামুখী ষড়যন্ত্র থেকে জনগণকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, চক্রান্ত হলে দাঁত ভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। এসময় রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সমর্থন চান তারেক রহমান।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত জনসভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ আহ্বান জানান। সাবেক মন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর মুক্তির দাবীতে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৮ সালের পর প্রথম টাঙ্গাইলে বিএনপি’র এমন জনসভা করে বিএনপি। এতে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে গোপালপুরের সূতি ভিএম হাইস্কুল মাঠের সমাবেশে যোগ দেন দলটির নেতা-কর্মী-সমর্থকরা।

গোপালপুর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি খন্দকার জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় ভাইস-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান ও প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।

তারেক রহমান বলেন, গত ৫ আগস্ট জনগণের বিজয়ের মাধ্যমে স্বৈরাচার পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এর ফলে গণতান্ত্রিক একটি ধাপ অর্জন হয়েছে। কিন্তু জনগণের যে মৌলিক অধিকার এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। এ কারণে দেশ গড়ার দিকে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। এ লক্ষ্যে দেশের রাজনীতির কিছু মৌলিক বিষয় নিয়ে আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। জনগণকে সঙ্গে নিয়েই আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে এই ৩১ দফা বাস্তবায়ন করবো।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, প্রায় ৮ হাজার কিলোমিটার দূরে থেকে আপনাদের সঙ্গে কথা বললেও সব সময়ই আমার মন পড়ে আছে আপনাদের মাঝেই। দেশে থাকতে আপনাদের ভূয়াপুর, গোপালপুরের উপর দিয়ে আমাকে প্রায়ই যেতে হতো দেশের উত্তরাঞ্চলে যাওয়ার সময়। সুতরাং আপনারা আমার মনের একটা বিরাট জায়গা দখল করে আছেন। তিনি বলেন, আমার পিতা আপনাদের সবার প্রাণের মানুষ; তিনি আমাকে ছোটবেলা থেকেই শিখিয়েছেন- কিভাবে দেশের খেটে খাওয়া কৃষক মজুর আর সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যেতে হয়, আর আমার মা আপনাদের সবার প্রিয় দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আমাকে শিখিয়েছেন মানুষের ভালোবাসা অর্জনের গুরুত্ব, শিখিয়েছেন দেশের মা বোনের সমস্যা সমাধানে কিভাবে কাজ করতে হয়।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পৃথিবীর মানুষ জানে টাঙাইল পৃথিবীর কোথায় অবস্থিত। তবে আমাদের গুনগত মান বাড়াতে হবে, ডিজাইনে আনতে হবে বৈচিত্র আর সূতি, সিল্ক এবং সূতি সিল্কের সংমিশ্রণেও নতুন নতুন ডিজাইনের শাড়ী তৈরী করতে হবে। শাড়ী আমাদের মা বোনের হাজার হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী পোশাক। একদিন আসবে আমরা বিদেশ থেকে শাড়ী আনবো না বরং পৃথিবীর যে সব দেশে মহিলারা শাড়ী পরেন, আর যেখানে বাংলাদেশীরা আছেন সেখানেও অদুর ভবিষতে শাড়ীর একাটাই নাম থাকবে টাঙাইল শাড়ী।

তারেক রহমান বলেন, এই এলাকার আরেকটি উল্লেখযোগ্য পণ্য হলো-চমচম। পৃথিবীর মানুষ জানে চমচম মানেই টাঙাইল আর পোড়াবাড়ি। কিন্তু এখানেও সমস্যা, নদীতে পানি নেই, দুধের দাম চড়া আমার গরীব ভাই বোনদের জন্য দাম সহনীয় নয়। আমরা যদি সুযোগ পাই দেশে গবাদিপশুর সংখ্যা যেমন বাড়াবো, তেমনি বন্ধ খাল আর নদী আবারও খনন করবো। আর এই চমচম বাংলাদেশের গন্ডি পেরিয়ে টিনজাত হয়ে পৃথিবীর সব কোনায় পৌঁছে যাবে।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরো বলেন, সারাবিশ্ব আজ পরিবেশ নিয়ে চিন্তিত, আমাদেরও পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। পলিথিন আমাদের নদী খাল পুকুর ফসলের জমি সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে। পলিথিন মাটি পানি কিছুতেই মিশে যায় না। তিনি বলেন, পাটের নতুন নতুন ব্যবহার বাড়াতে হবে, আবিষ্কার করতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, আপনাদের পাশেই আছে মধুপুর, আমি জানি এখানে মধুপুরের অনেকেই আছেন। মধুপুরের জলডুবি আনারসের ভক্ত নয় এমন মানুষ বোধহয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, ধান উৎপাদনে আপনারা অপ্রতিদ্বন্দ্বী আমি জানি, আপনাদের হারানো খুবই কঠিন। তারপরেও সারাদেশে খাদ্য উৎপাদন আরো বাড়ানোর পরিকল্পনায় আপনাদের সাহায্য আমাদের সবচেয়ে বেশি দরকার, আমরা সব সহযোগিতা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।